শায়খ আহমাদুল্লাহ জীবনী (বিস্তারিত)

শায়খ আহমাদুল্লাহ, যিনি আব্দুল মোমিন মোহাম্মদ আহমাদুল্লাহ নামেও পরিচিত, একজন বিখ্যাত বাংলাদেশী ইসলামী পণ্ডিত, আলোচক, লেখক এবং সমাজকর্মী। তিনি আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান, যা বাংলাদেশ ও বিশ্বব্যাপী ইসলাম শিক্ষা ও প্রচারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

শায়খ আহমাদুল্লাহ জীবনী (বিস্তারিত)
শায়খ আহমাদুল্লাহ 

শায়খ আহমাদুল্লাহ'র জন্ম ও শিক্ষা:
  • জন্ম: ১৯৬১ সালে, নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লায়।
  • শিক্ষা:
    • হাটহাজারী দারুল উলুম মাদ্রাসা
    • ঢাকার আল-জামিয়াতুল আহলিয়্যা দারুল উলুম
  • উচ্চশিক্ষা:
    • মদিনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, সৌদি আরব
    • আল-আযহার বিশ্ববিদ্যালয়, মিসর

শায়খ আহমাদুল্লাহ'র কর্মজীবন:

  • ১৯৮৮ সালে ফতুল্লায় আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেন।
  • ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে:
    • ইসলামী শিক্ষা প্রদান
    • দাওয়াহ ও তাবলিগ
    • সমাজসেবা
    • প্রকাশনা
  • বিশ্বব্যাপী ইসলামী সম্মেলন ও অনুষ্ঠানে বক্তৃতা প্রদান।
  • লেখক:
    • "ইসলামে নারীর অধিকার", "সহীহ বুখারীর শিক্ষা", "আল্লাহর রহমত" সহ বেশ কয়েকটি বই রচনা করেছেন।

শায়খ আহমাদুল্লাহ'র উল্লেখযোগ্য কর্ম:

  • বাংলাদেশে ইসলামী শিক্ষা ও প্রচারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।
  • বিশ্বব্যাপী লক্ষ লক্ষ মানুষকে ইসলাম সম্পর্কে শিক্ষিত করেছেন।
  • তার বক্তৃতা সহজ ভাষা, কুরআনের আয়াত, হাদিস ও প্রাসঙ্গিক উদাহরণ দ্বারা সমৃদ্ধ।
  • ইসলামের নীতিশাস্ত্র, আধ্যাত্মিকতা ও নৈতিকতার উপর জোর দেন।
  • সামাজিক সমস্যা, যেমন দারিদ্র্য, বৈষম্য ও সাম্প্রদায়িক সহিংসতার বিরুদ্ধে সোচ্চার।

শায়খ আহমাদুল্লাহ'র পুরষ্কার ও সম্মাননা:

  • ২০২১ সালে, বাংলাদেশ সরকার তাকে ইসলামী শিক্ষা ও প্রচারে অবদানের জন্য "সিভিল অ্যাওয়ার্ড" প্রদান করে।
  • তিনি বিশ্বব্যাপী মুসলিম সম্প্রদায়ের দ্বারা সম্মানিত ও প্রশংসিত একজন ব্যক্তিত্ব।

শায়খ আহমাদুল্লাহ'র বিতর্ক:

  • কিছু সমালোচক শায়খ আহমাদুল্লাহর রক্ষণশীল মতাদর্শের জন্য সমালোচনা করেছেন।
  • যাইহোক, তার সমর্থকরা যুক্তি দেন যে তিনি কেবল ইসলামের শিক্ষা প্রচার করছেন এবং তার মতামত তার নিজস্ব ব্যাখ্যার উপর ভিত্তি করে।

শায়খ আহমাদুল্লাহ'র উত্তরাধিকার:

  • শায়খ আহমাদুল্লাহ একজন প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব যিনি বাংলাদেশ ও বিশ্বব্যাপী ইসলাম শিক্ষা ও প্রচারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।
  • তিনি লক্ষ লক্ষ মানুষকে ইসলাম সম্পর্কে শিক্ষিত করেছেন এবং তাদের জীবনযাপনকে ইসলামী নীতি অনুসারে গড়ে তুলতে অনুপ্রাণিত করেছেন।
  • তার লেখা ও বক্তৃতা আগামী প্রজন্মের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হিসেবে কাজ করবে।

শায়খ আহমাদুল্লাহ কোন মসজিদের খতিব ?

তিনি জাপান, ভারত ও আরব আমিরাতসহ বিভিন্ন দেশের আন্তর্জাতিক অনুষ্ঠানের দাওয়াতি কাজে অংশগ্রহণ করেছেন। এছাড়াও তিনি আইকিউএ. ইনফো নামে একটি ইসলামি প্রশ্নোত্তর ওয়েবসাইট প্রতিষ্ঠা করেছেন। তিনি বর্তমানে নারায়ণগঞ্জের ভূমিপল্লী জামে মসজিদের খতিব হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন।

শায়খ আহমাদুল্লাহ যোগাযোগ ও সাক্ষাৎ ঃ-  https://ahmadullah.info/contact-us

শায়খ আহমাদুল্লাহ সম্পর্কে আরও জানতে:

আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা । 

আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা হলেন শায়খ আহমাদুল্লাহ, যিনি আব্দুল মোমিন মোহাম্মদ আহমাদুল্লাহ নামেও পরিচিত।

১৯৮৮ সালে তিনি নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লায় আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেন।

ফাউন্ডেশনটির লক্ষ্য হল ইসলাম শিক্ষা ও প্রচার করা

শায়খ আহমাদুল্লাহ ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে নিম্নলিখিত কার্যক্রম পরিচালনা করেন:

  • ইসলামী শিক্ষা প্রদান:
    • মাদ্রাসা, মসজিদ ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে ইসলামী শিক্ষাক্ষেত্র পরিচালনা।
    • বিভিন্ন বিষয়ে ইসলামী পাঠ্যক্রম ও কর্মশালা আয়োজন।
  • দাওয়াহ ও তাবলিগ:
    • মসজিদ, সমাবেশ ও অন্যান্য অনুষ্ঠানে বক্তৃতা প্রদান।
    • ইসলাম সম্পর্কে মানুষকে শিক্ষিত করার জন্য লেফলেট ও বই বিতরণ।
  • সমাজসেবা:
    • দরিদ্র ও অভাবীদের জন্য খাদ্য ও আশ্রয় সরবরাহ।
    • বিপর্যস্তদের জন্য ত্রাণ ও সহায়তা প্রদান।
  • প্রকাশনা:
    • ইসলামী বিষয়ের উপর বই, পত্রিকা ও অন্যান্য প্রকাশনা তৈরি ও বিতরণ।

আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ ও বিশ্বব্যাপী ইসলাম শিক্ষা ও প্রচারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

শায়খ আহমাদুল্লাহ একজন সম্মানিত ও প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব যিনি ইসলামের নীতিশাস্ত্র, আধ্যাত্মিকতা ও নৈতিকতার উপর জোর দেন।

শায়খ আহমাদুল্লাহ জীবনী (বিস্তারিত)

পরিচিতি

শায়খ আহমাদুল্লাহ

শায়খ আহমাদুল্লাহ বাংলাদেশের স্বনামধন্য ইসলামী ব্যক্তিত্ব। বিদগ্ধ আলোচক, লেখক ও খতীব। ইসলামের খেদমতে তিনি নানামুখী কাজ করেন। লেখালেখি, গবেষণা ও সভা-সেমিনারে লেকচারসহ নানামুখী দাওয়াতি কার্যক্রম পরিচালনা করেন। উন্মুক্ত ইসলামিক প্রোগ্রাম ও প্রশ্নোত্তরমূলক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ এবং টিভি অনুষ্ঠানে সময় দেওয়াসহ বহুমুখী সেবামূলক কাজে সপ্রতিভ গুণী ও স্বনামধন্য এই আলেমে দীন। দেশে-বিদেশে শিক্ষা, সেবা ও দাওয়াহ— ছড়িয়ে দিতে তিনি প্রতিষ্ঠা করেছেন আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন

শায়খ আহমাদুল্লাহর জন্ম ১৫ ডিসেম্বর ১৯৮১ সালে লক্ষ্মীপুর জেলার বশিকপুরে। বাবার নাম মোহাম্মাদ দেলোয়ার হোসেন, মায়ের নাম মোসাম্মাত দেলোয়ারা বেগম। বাবা ব্যবসায়ী ছিলেন ও মা গৃহিণী। ছয় ভাই-বোনের মধ্যে তিনি দ্বিতীয়। শায়খ আহমাদুল্লাহ তিন পুত্র ও এক কন্যা সন্তানের জনক।

তাঁর পড়ালেখার হাতেখড়ি মমতাময়ী মায়ের হাতে। প্রাথমিক পড়াশোনা বশিকপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। এরপর ভর্তি হন কওমী মাদরাসায়। নোয়াখালীর একাধিক মাদরাসায় কয়েক বছর পড়াশোনা করার পর তিনি ভর্তি হন হাতিয়ার ফয়জুল উলূম মাদরাসায়। সেখানে প্রথিতযশা আলেমে দীন মুফতী সাইফুল ইসলাম (রহ.)-এর সান্নিধ্য ও ছাত্রত্ব লাভের সুযোগ তৈরি হয়। এরপর তিনি দেশের সর্ববৃহৎ দীনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দারুল উলূম হাটহাজারী মাদারায় ভর্তি হন। কওমী মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড (বেফাক) থেকে (সানুবিয়্যা) উচ্চমাধ্যমিকে পরীক্ষা দিয়ে দশম স্থান, (ফযীলত) স্নাতকে তৃতীয় স্থান ও ২০০১ সালে দাওরায়ে হাদীসে সম্মিলিত মেধাতালিকায় দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেন। দাওরায়ে হাদীস শেষ করে খুলনা দারুল উলূম থেকে ইফতা সম্পন্ন করেন।

লেখাপড়া শেষ করে মিরপুরের দারুর রাশাদে শিক্ষকতায় যোগ দেন। ২০০৩ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত সেখানেই কর্মরত ছিলেন। মাঝে এক বছর মিরপুরের আরজাবাদ মাদরাসায়ও হাদীসের শিক্ষকতা করেছেন। পাশাপাশি ২০০৪ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত ইমাম ও খতিবের দায়িত্ব পালন করেন মিরপুরের বায়তুল ফালাহ জামে মসজিদে। ২০০৯ সালে সুযোগ আসে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে কাজ করার। আরবী ভাষায় বিশেষ দক্ষতার কারণে ডাক পান মধ্যপ্রাচ্যে। সৌদি আরবের পশ্চিম দাম্মাম ইসলামিক দাওয়াহ সেন্টারে যোগ দেন। একজন প্রীচার ও ট্রান্সলেটর হিসেবে সেখানে দীর্ঘ প্রায় দশ বছর কাজ করেন। আরবদের পাশাপাশি বাংলাদেশিদের আস্থা ও ভালোবাসা অর্জন করেন তিনি।

শায়খ আহমাদুল্লাহ প্রতিষ্ঠা করেছেন আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন। শিক্ষা, সেবা ও দাওয়াহ—তিন বিভাগে কাজ করছে প্রতিষ্ঠানটি।

শুদ্ধ চিন্তা ও বিশুদ্ধ জ্ঞান চর্চার অংশ হিসেবে মূল ধারার বেশিরভাগ টেলিভিশন চ্যানেল এবং ওয়াজ মাহফিলসহ বিভিন্ন উন্মুক্ত প্ল্যাটফরমে লেকচার দেন তিনি।

ইসলাম নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি লেখালিখিও করেন শায়খ আহমাদুল্লাহ। তাঁর লেখা রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সকাল সন্ধ্যার দু’আ ও যিকর পুস্তিকা এবং ‘পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ সালাত পরবর্তী দু’আ ও যিকর’-এর কার্ড চার লক্ষাধিক কপি এ যাবত বিতরণ করা হয়েছে। তাঁর সংকলিত ও সম্পাদিত রমাদান প্ল্যানার দুই লক্ষাধিক কপি বিক্রি হয়েছে। উমরাহ কীভাবে করবেন বইটি পাঠক মহলে ব্যাপক সমাদৃত হচ্ছে। তারাবীহর সালাতে কুরআনের বার্তা পাঠকমহলে সাড়া জাগাতে সক্ষম হয়েছে।

শায়খ আহমাদুল্লাহ এ পর্যন্ত দাওয়াহ ও গবেষণা বিষয়ে কয়েক শ' প্রবন্ধ-নিবন্ধ লিখেছেন। বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যমগুলোতে তাঁর লেখা প্রকাশিত হয়। আরবী ভাষাতেও প্রকাশিত হয়েছে তাঁর অনেক প্রবন্ধ।

শায়খ আহমাদুল্লাহ বর্তমানে নারায়ণগঞ্জের ভূমিপল্লী জামে মসজিদের খতীবের দায়িত্ব পালন করছেন।

দেশের গণ্ডি পেরিয়ে ইতোমধ্যেই তিনি জাপান, ভারত, আরব আমিরাত, সৌদি আরব, দক্ষিণ আফ্রিকা, তুরস্ক, মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ডে আন্তর্জাতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছেন।

উপসংহার:

শায়খ আহমাদুল্লাহ একজন বিখ্যাত ইসলামী পণ্ডিত, আলোচক, লেখক এবং সমাজকর্মী যিনি বাংলাদেশ ও বিশ্বব্যাপী ইসলাম শিক্ষা ও প্রচারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি তার জ্ঞান, বিনয় ও অনুপ্রেরণামূলক বক্তৃতার জন্য সম্মানিত।

দ্রষ্টব্য: এই জীবনীটি শুধুমাত্র তথ্যের উদ্দেশ্যে। শায়খ আহমাদুল্লাহ সম্পর্কে আরও জানতে, অনুগ্রহ করে তার লেখা ও বক্তৃতাগুলি পড়ুন এবং তার প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগাযোগ করুন।

Post a Comment

Previous Post Next Post