ব্লাড প্রেশার বা উচ্চ রক্তচাপ: কেন হয়, লক্ষণ ও কমানোর উপায়।

রক্তচাপ হলো রক্ত যখন ধমনীতে প্রবাহিত হয় তখন দেয়ালে যে শক্তি প্রয়োগ করে। উচ্চ রক্তচাপ, যা হাইপারটেনশন নামেও পরিচিত, হল যখন রক্তচাপ স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হয়। দীর্ঘমেয়াদী উচ্চ রক্তচাপ হৃদরোগ, স্ট্রোক, কিডনি রোগ, এবং অন্যান্য গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যার ঝুঁকি বাড়ায়।

ব্লাড প্রেশার বা উচ্চ রক্তচাপ কেন হয়, লক্ষণ ও কমানোর উপায়

উচ্চ রক্তচাপের কারণ:

উচ্চ রক্তচাপের অনেকগুলি সম্ভাব্য কারণ রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে:

  • জীবনযাত্রার অভ্যাস: অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, অল্প運動, ধূমপান, অতিরিক্ত মদ্যপান, মানসিক চাপ, অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতা।
  • পারিবারিক ইতিহাস: যদি আপনার পরিবারে উচ্চ রক্তচাপের ইতিহাস থাকে, তাহলে আপনারও ঝুঁকি বেশি।
  • বয়স: বয়স বাড়ার সাথে সাথে রক্তচাপ বাড়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
  • অন্যান্য রোগ: কিডনি রোগ, ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, থাইরয়েড সমস্যা ইত্যাদি।
  • ওষুধ: কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে রক্তচাপ বাড়তে পারে।

উচ্চ রক্তচাপের  লক্ষণ:

বেশিরভাগ ক্ষেত্রে উচ্চ রক্তচাপের কোন লক্ষণ থাকে না, তাই এটিকে "সাইলেন্ট কিলার" বলা হয়।

তবে কিছু লক্ষণ দেখা দিতে পারে, যার মধ্যে রয়েছে:

  • মাথা ব্যাথা
  • চোখ ঝাপসা দেখা
  • শ্বাসকষ্ট
  • মাথা ঘোরা
  • হৃদস্পন্দন বৃদ্ধি
  • চেস্টে ব্যথা
  • नाक দিয়ে রক্তপাত

উচ্চ রক্তচাপের পরিমাপ:

রক্তচাপ একটি স্থিগমাত্রক যন্ত্র ব্যবহার করে পরিমাপ করা হয় যা রক্তচাপের দুটি সংখ্যা দেখায়:

  • সিস্টোলিক রক্তচাপ: হৃৎপিণ্ড যখন সংকুচিত হয় তখন রক্তচাপ।
  • ডায়াস্টোলিক রক্তচাপ: হৃৎপিণ্ড যখন শিথিল হয় তখন রক্তচাপ।

স্বাভাবিক রক্তচাপ:

  • স্বাভাবিক: 120/80 mmHg এর কম
  • উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি: 120/80 mmHg থেকে 129/84 mmHg
  • 1ম স্তরের উচ্চ রক্তচাপ: 130/85 mmHg থেকে 139/89 mmHg
  • 2য় স্তরের উচ্চ রক্তচাপ: 140/90 mmHg এর বেশি

উচ্চ রক্তচাপ কমানোর উপায়:

উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যার ঝুঁকি বাড়ায়।

জীবনযাত্রার পরিবর্তন :

  • স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস: লবণ, ফ্যাট এবং কোলেস্টেরল কম, ফল, শাকসবজি এবং পূর্ণ শস্য বেশি খাওয়া।
  • নিয়মিত ব্যায়াম: সপ্তাহে বেশিরভাগ দিন 30 মিনিট মাঝারি-তীব্রতার ব্যায়াম করুন।
  • ওজন কমানো: যদি আপনি অতিরিক্ত ওজন বা স্থূল হন, তাহলে এমনকি অল্প ওজন কমানোও আপনার রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করতে পারে।
  • ধূমপান ত্যাগ: ধূমপান রক্তচাপ বাড়ায় এবং হৃদরোগ এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়।
  • মদ্যপান সীমাবদ্ধ করুন: অতিরিক্ত মদ্যপান রক্তচাপ বাড়াতে পারে। পুরুষদের জন্য প্রতিদিন দুটি পানীয় এবং মহিলাদের জন্য একটি পানীয়ের চেয়ে বেশি পান করা উচিত নয়।
  • মানসিক চাপ কমাতে শিখুন: চাপ ব্যবস্থাপনা কৌশল যেমন যোগব্যায়াম, ধ্যান বা গভীর শ্বাস অনুশীলন অনুশীলন করুন।
  • পর্যাপ্ত ঘুম: প্রতি রাতে 7-8 ঘন্টা ঘুমান।

উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ:

জীবনযাত্রার পরিবর্তনগুলি যথেষ্ট না হলে, ডাক্তার রক্তচাপ কমাতে ওষুধের পরামর্শ দিতে পারেন।

উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা:

উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য নিয়মিত ডাক্তারের সাথে দেখা করা এবং আপনার রক্তচাপ পরীক্ষা করা গুরুত্বপূর্ণ। আপনার ডাক্তার আপনার জন্য একটি চিকিৎসা পরিকল্পনা তৈরি করতে পারেন যাতে আপনার রক্তচাপ লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে থাকে।

মনে রাখবেন:

উচ্চ রক্তচাপ একটি গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা, তবে এটি নিয়ন্ত্রণে রাখা এবং জটিলতা প্রতিরোধ করা সম্ভব। জীবনযাত্রার পরিবর্তন এবং ওষুধের মাধ্যমে, আপনি আপনার রক্তচাপ স্বাস্থ্যকর পর্যায়ে রাখতে পারেন এবং একটি দীর্ঘ ও সুস্থ জীবনযাপন করতে পারেন।

অতিরিক্ত তথ্য:




Kalam posts

Post a Comment

Previous Post Next Post