পিত্তথলির পাথর হলো পিত্তথলি নামক একটি ছোট অঙ্গে তৈরি শক্ত জমা। পিত্তথলি লিভারের নিচে অবস্থিত এবং এটি হজমে সাহায্য করার জন্য লিভার থেকে তৈরি পিত্তরস সংরক্ষণ করে।
পিত্তথলির পাথররে উপসর্গ:
- شديدة পেটব্যথা, বিশেষ করে ডান দিকে উপরের অংশে বা কাঁধের নিচে
- বমি বমি ভাব এবং বমি
- জ্বর
- ঠান্ডা লাগা
- পেটে ফোলাভাব
- হলুদ ত্বক ও চোখ (জন্ডিস)
পিত্তথলির পাথরের উল্লেখযোগ্য দিক:
- পেটব্যথা সাধারণত খাওয়ার পরে ঘটে, বিশেষ করে যদি খাবারে চর্বি বেশি থাকে।
- ব্যথা কয়েক ঘন্টা স্থায়ী হতে পারে এবং তীব্র হতে পারে।
- জ্বর এবং ঠান্ডা লাগা থাকলে এটি একটি সংক্রমণের ইঙ্গিত হতে পারে।
- জন্ডিস হলো পিত্তনালীতে বাধার একটি লক্ষণ যা পিত্তরসকে রক্তে প্রবেশ করতে দেয়।
পিত্তথলির পাথরের কারণ:
- পিত্তরসে অস্বাভাবিকতা:
- উচ্চ কোলেস্টেরল: পিত্তরসে অতিরিক্ত কোলেস্টেরল পিত্তথলির পাথরের প্রধান কারণ।
- অতিরিক্ত বিলিরুবিন: কিছু লিভারের রোগের ফলে অতিরিক্ত বিলিরুবিন তৈরি হতে পারে, যা পিত্তথলির পাথরের ঝুঁকি বাড়ায়।
- পিত্তথলির গতিশীলতা হ্রাস:
- পিত্তথলি পুরোপুরি খালি না হলে: পিত্তথলি পুরোপুরি খালি না হলে, পিত্তরস ঘনীভূত হতে পারে এবং পাথর তৈরি হতে পারে।
- অন্যান্য ঝুঁকির কারণ:
- মোটা হওয়া: স্থূলতা পিত্তথলির পাথরের ঝুঁকি বাড়ায়, বিশেষ করে মহিলাদের ক্ষেত্রে।
- দ্রুত ওজন কমানো: দ্রুত ওজন কমানোর ফলে পিত্তথলির পাথরের ঝুঁকি বাড়ে।
- গর্ভাবস্থা: গর্ভবতী মহিলাদের পিত্তথলির পাথরের ঝুঁকি বেশি থাকে।
- কিছু ওষুধ: কিছু ওষুধ, যেমন জন্ম নিয়ন্ত্রণের ঔষধ, পিত্তথলির পাথরের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
- পরিবারে ইতিহাস: যদি আপনার পরিবারে পিত্তথলির পাথরের ইতিহাস থাকে তবে আপনার ঝুঁকিও বেশি।
পিত্তথলির পাথরের পরীক্ষা-নিরীক্ষা:
- আপনার ডাক্তার আপনার উপসর্গ এবং চিকিৎসা ইতিহাস সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করবেন।
- তারা আপনার পেট পরীক্ষা করবেন।
- পিত্তথলির পাথর নির্ণয় করতে তারা নিম্নলিখিত পরীক্ষাগুলির মধ্যে একটি বা একাধিক করতে পারেন:
পিত্তথলির পাথর প্রতিরোধের উপায়
কিছু পদক্ষেপ নিয়ে আপনি পিত্তথলির পাথরের ঝুঁকি কমাতে পারেন:
- স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখুন: আপনার যদি অতিরিক্ত ওজন থাকে, তাহলে ধীরে ধীরে ওজন কমানোর চেষ্টা করুন।
- স্বাস্থ্যকর খাবার খান:
- চর্বিযুক্ত খাবার, বিশেষ করে প্রাণীজ উৎসের চর্বি, কম খান।
- ফল, শাকসবজি এবং গোটা শস্য বেশি খান।
- ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খান, যেমন ওটমিল, বাদাম এবং বীজ।
- নিয়মিত ব্যায়াম করুন: সপ্তাহে বেশিরভাগ দিন কমপক্ষে 30 মিনিট মাঝারি-तीव्रতার ব্যায়াম করুন।
- আপনার কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখুন: আপনার যদি উচ্চ কোলেস্টেরল থাকে, তাহলে আপনার ডাক্তারের সাথে কীভাবে এটি নিয়ন্ত্রণে রাখবেন সে সম্পর্কে কথা বলুন।
- মধুমেহ নিয়ন্ত্রণে রাখুন: আপনার যদি ডায়াবেটিস থাকে, তাহলে এটি নিয়ন্ত্রণে রাখা গুরুত্বপূর্ণ।
- আপনার ডাক্তারের সাথে নিয়মিত পরামর্শ করুন: আপনার যদি পিত্তথলির পাথরের ঝুঁকির কারণ থাকে, তাহলে আপনার ডাক্তারের সাথে নিয়মিত পরামর্শ করুন।
কিছু নির্দিষ্ট খাবার যা পিত্তথলির পাথরের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে:
- জলপাই তেল: জলপাই তেলে স্বাস্থ্যকর চর্বি থাকে যা পিত্তথলির পাথরের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে।
- সবুজ শাকসবজি: সবুজ শাকসবজি ফাইবার এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের ভাল উৎস, যা পিত্তথলির পাথরের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে।
- ফল: फल ফাইবার এবং ভিটামিন সি-এর ভাল উৎস, যা পিত্তথলির পাথরের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে।
- গোটা শস্য: গোটা শস্য ফাইবারের ভাল উৎস, যা পিত্তথলির পাথরের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে।
মনে রাখবেন:
- এই তথ্যগুলি কেবলমাত্র তথ্যগত উদ্দেশ্যে এবং চিকিৎসা পরামর্শের বিকল্প নয়।
- আপনার যদি পিত্তথলির পাথরের ঝুঁকির কারণ থাকে বা পিত্তথলির পাথরের উপসর্গ অনুভব করেন তবে আপনার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা গুরুত্বপূর্ণ।