তীব্র গরমে সুস্থ থাকতে করণীয়।

গ্রীষ্মের তীব্র গরমে যেহেতু শরীর থেকে পানি দ্রুত বের হয়ে যায়, তাই কিছুক্ষণ পরপর প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা উচিত। আপনার শরীরে পানির পরিমাণ ঠিক আছে কি-না, তা বোঝার সবচেয়ে ভালো উপায় হলো- প্রস্রাবের রং কেমন আছে তা দেখা। যদি প্রস্রাব হলুদাভ হয়, তাহলে বুঝতে হবে আপনার শরীরে ডিহাইড্রেশনের সৃষ্টি হয়েছে।

তীব্র গরমে সুস্থ থাকতে করণীয়।

তীব্র গরমে সুস্থ থাকতে করণীয়।

তীব্র গরমে সুস্থ থাকতে পানিশূন্যতা রোধ:

  • প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন, তৃষ্ণা না পেলেও।
  • লেবু পানি, ডাবের পানি, তরমুজের রস, শরবত ইত্যাদি পান করুন।
  • হালকা লবণ মিশিয়ে পানি পান করলে শরীরের লবণ ভারসাম্য রক্ষা করতে সাহায্য করে।
  • বাইরে বের হলে সঙ্গে পানি রাখুন।

তীব্র গরমে খাবার:

  • হালকা, সহজপাচ্য খাবার খান।
  • বেশি তেলমশলাযুক্ত, ঝাল খাবার এড়িয়ে চলুন।
  • শাকসবজি, ফল, ডাল, ভাত ইত্যাদি বেশি খান।
  • নিয়মিত ভাত খান।

তীব্র গরমে পোশাক:

  • হালকা রঙের, ঢিলেঢালা সুতির পোশাক পরুন।
  • মাথায় টুপি, ছাতা ব্যবহার করুন।
  • বাইরে বের হলে সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন।

ঘুম:

  • পর্যাপ্ত ঘুম নিন।
  • রাতে ঠান্ডা ঘরে ঘুমানোর চেষ্টা করুন।
  • বিদ্যুতের পাখা, এসি ব্যবহার করতে পারেন।

তীব্র গরমে সুস্থ থাকতে অন্যান্য করনীয়: 

  • বাইরে বের হওয়ার সময় দীর্ঘক্ষণ রোদে থাকবেন না।
  • বিকেল ১১ টা থেকে ৩ টার মধ্যে বাইরে বের হওয়া এড়িয়ে চলুন।
  • নিয়মিত গোসল করুন।
  • ঘর পরিষ্কার রাখুন, বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা রাখুন।
  • অসুস্থ বোধ করলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

তীব্র গরমে বিশেষ সতর্কতা:

  • ছোট বাচ্চা, বৃদ্ধ, গর্ভবতী মহিলাদের বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।
  • যারা দীর্ঘস্থায়ী রোগে ভুগছেন, তাদের নিয়মিত ওষুধ খেতে হবে এবং চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলতে হবে।

এই টিপসগুলো মেনে চললে আপনি তীব্র গরমেও সুস্থ থাকতে পারবেন।

তীব্র গরমে সুস্থ থাকতে কিছু অতিরিক্ত টিপস:

  • বাইরে বের হওয়ার আগে আবহাওয়ার পূর্বাভাস জেনে নিন।
  • সঙ্গে ফার্স্ট-এইড কিট রাখুন।
  • প্রচুর পরিমাণে ফল খান।
  • ঠান্ডা পানিতে গোসল করুন।
  • ঠান্ডা পানিতে মুখ ধুয়ে নিন।
  • বরফ ঘষে নিন।
  • ঠান্ডা পানিতে পা ডুবিয়ে রাখুন।
  • ঠান্ডা ঘরে কিছুক্ষণ বসুন।
তীব্র গরমে সুস্থ থাকতে করণীয়।

তীব্র গরমে যেসব শারীরিক সমস্যা হতে পারে

ডা. আবেদ হোসেন বলেন, অসহনীয় গরমে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। এ সময় সবচেয়ে বেশি ঝুঁকি হচ্ছে হিট স্ট্রোকের। পরিবারের বয়স্ক, অসুস্থ সদস্য এবং শিশুরা থাকেন সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে। হিট স্ট্রোকের মূল কারণ পানিশূন্যতা। বয়স্ক, অসুস্থ এবং শিশুরা অনেক সময়ই এটা অনুধাবন করতে পারে না। তাই তাদের দিকে বাড়তি নজর রাখতে হবে।

পাশাপাশি, গরমের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েই চলেছে ডায়রিয়ার প্রকোপ। এ ছাড়াও প্রচণ্ড গরমে জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্টের রোগ, নিউমোনিয়া, পানিবাহিত টাইফয়েড ও জন্ডিস এবং চর্ম রোগ বা ফুসকুাড়র প্রকোপ অনেক বেড়ে যায়।

হিট স্ট্রোক কী ?

হিট স্ট্রোক হলো তাপজনিত অসুস্থতার সবচেয়ে গুরুতর পর্যায়, যখন শরীরের

হিট স্ট্রোকের লক্ষণ ও চিকিৎসা

ডা. আবেদ হোসেন বলেন, অতিরিক্ত গরমে শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে গেলে তাকে হিট স্ট্রোক বলা হয়। এর ফলে ঘাম বন্ধ হয়ে গিয়ে শরীরের তাপমাত্রা দ্রুত বাড়তে শুরু করে।

হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হলে মাথা ব্যথা ও মাথা ঘোরা এবং চোখে ঝাপসা দেখতে পারেন ব্যক্তি । অস্বাভাবিক দুর্বলতা, মাংসে টান ও বমি অনুভব হয়। শেষ পর্যায়ে অজ্ঞান হয়ে যাওয়া এবং খিঁচুনি হতে পারে।প্রাথমিকভাবে হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত ব্যক্তিকে অপেক্ষাকৃত ঠান্ডা জায়গায় নিয়ে গিয়ে শরীর থেকে যতটুকু সম্ভব কাপড় খুলে ফেলতে হবে। ফ্যান বা এসির ব্যবস্থা থাকলে দ্রুত তা চালু করতে হবে। না হলে হাত পাখা দিয়ে রোগীর শরীরে বাতাস করতে হবে। ঠান্ডা পানি দিয়ে শরীর মুছতে হবে। অতি দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে রোগীকে।

আশা করি এই তথ্যগুলো আপনার জন্য উপকারী হবে।

Post a Comment

Previous Post Next Post